বিয়ে
গল্প : #বড়_ভাইয়ের_বউ দেখতে
গিয়ে নিজেই বিয়ে করে আনছি !!!
- এই এলাকার.... মানে... এই
টং দোকানে বসে থাকার মধ্যে
যদি কোন কিউটুস পোলা থাকে
তাহলে... আমার নামটাই আগে
আসবো..
আর আমি তো ঐ সামনের কলেজের
সকল মাইয়ার ক্রাস...
ব্যাপারটা তো বুঝতে হইবো নাকি,
কার সাথে তোরা বসে আছোস।
তোদের তো রাজার থেকে ও
সৌভাগ্যের কপাল,
তা না হলে কী আমার মতো
কারো সাথে বসে থাকতে পাড়তি।
- দেখ মামা... চাপাবাজি
একটু কমা, সারাজীবন তো দেখছি
সব মাইয়ার পিছন পিছন ঘুরিস খালি।
- আরে..... আমি কেনো মাইয়াদের
পিছন পিছন ঘুরতে যামু...
ওরাই তো আমাকে ভালো করে
দেখার জন্য আমার সামনে দৌঁড়াই চলে
যায়।
- সাহরিয়া ভাই.... সব তো বুঝলাম,
তবে কোনদিন তো কোন মাইয়ার সাথে
কথা বলে দেখি নাই আপনাকে।
- পাগল নাকি.... আমি কী কোন
মাইয়ার সাথে কথা বলে, আমার
স্টাটাস নিচে নামাই দিমু ।
- ভাই তবে মানতেই হইবো,
আপনি একটা জিনিস ও বটে।
- সাবাস.... তুই এক মাত্র এতদিনে
আমার প্রতিভা বুঝতে পাড়ছিস।
ওরা ও আস্থে আস্থে বুঝতে পাড়বো।
এর মধ্যেই মিথিলা আসলো।
- এই রায়ান... সাহরিয়া ভাইয়ারে
একটু আসতে বলবি।
- কী..... চান্দু.. তোর মুখ খানা এমন হঠাৎ
লাল হইলে ক্যান..খুব তো একটু আগে
আমাকে চাঁপাবাজ বললি...
এবার কী হইলো.. প্রমান পাইলি তো নাকি।
- সাহরিয়া.. ভাই আমার তুই ওরে
আর যাই বলিস অন্য কিছু বলিস না
কেমন...
আমি মিথিলারে ছাঁড়া বাঁচমু না।
- ঠিক আছে... তবে একটা কন্ডিশন
আছে।
- আচ্ছা যা বলবি তাই মাথে
পেতে নিমু... বল খালি।
- এখন থেকে আমাকে সবাই বস
হিসেবে মনবি...
আর দোকানের যা বিল হবে তোরে
দিবি..
তাহলে আমি রাজি।
- ঠিক আছে... যা আমি রাজি।
- আচ্ছা মনে থাকে যেনো।
- তবে তোর তো কোন বিশ্বাস
নাই... তুই যে পরিমাণ এর হারামী।
- আচ্ছা বিশ্বাস না
হলে আমার ফোনে ফোন
দে...
আমি রিসিভ করে পকেটে রাখি
যা বলি,
সব তো শুনতে পাবি নাকি।
- ওকে.... যে তাহলে... ফোন
দিতেছি।
- হুমমমম।
- হাই মিথিলা... কেমন আছো।
- আপনার আসতে এত সময়
লাগলো কেনো।
- একটু বোঝাপড়া করলাম তো
তাই...।
- কীসের বোঝাপড়া শুনি।
- সেটা তুমি বুঝবা না...
কী জন্য ডাকছো তাই বলো।
- সেদিন আপনি যেটা বলছিলেন,
আমি সেটাতে রাজি।
- কোনদিন কী বলছিলাম।
- ঐ যে সেদিন বললেন না।
- আরে কীইইইই বলছি।
- বললেন না আপনি, আমাকে ভালোবাসেন।
- ওহহহহহহ ঐ ব্যাপার।
- আসলে.. মিথিলা... তুমি
জিনিসটা না বোঝার আগেই
তো দৌড় দিছিলা...।
- মানে।
- আসলে আমি রায়ান এর হয়ে
তোমাকে আই লাভ ইউ বলতে
গেছিলাম...
সেদিন আমি বলছিলাম,
রায়ান তোমাকে আই লাভ হউ মিথিলা।
তুমি হয়তো প্রথমটা বুঝতে পারো নি
হি হি হি।
ওমনি.... ঠাসসসসসসসসসসসসসসস।
- এর পর নিজের জন্য হলো
বলতে আসবেন... অন্য জনেরটা
অন্য জনকে বলতে বলবেন।
- হুমমমম।
গালে হাত দিয়ে.... আবার টং দোকানে
ফিরে আসলাম।
- মামা তুই মানুষ নারে ।
আমি কোনদিন ভাবি নাই তুই
আমার জন্য থাপ্পড় খাবি।
- হুমমমমম.... এবার বল কয়টা
আঙ্গুল এর দাগ উঠছে।
- চারটা।
- ৫০০ টাকা
দে।
- কেনো।
- চার আঙ্গুল এর জন্য চারশো আর
একশো বেনাস।
- না... দিমু না।
- ওকে... আমি মিথিলারে ফোন দিয়া
লাভ হউ টু বলতেছি।
- দেখ মামা... আমার কাছে
৫০০ টাকাই আছে।
- ওকে তাহলে চারশোই দে।
- হুমমমমমম ধর।
সাহরিয়া... মিথিলার নাম্বারটা
দিবি।
- কেনো নিজে গিয়ে নিতে পারিস না।
- দে না মামা।
- একশো টাকা লাগবে।
হইলো আছি না হইলে নাই।
- এই নে ধর টাকা।
- আচ্ছা দে... আর
নরম্বার তোরে এস এম এস
করে দিছি দেখ।
- হুমমমমমম..... আর সাহরিয়া
তুই আসলেই মানুষ না....
হারামী তুই একটা।
- জানি, তোরে আর নতুন করে বলা
লাগবে না..
সে জন্যই তো তোরে ভুল নাম্বার
দিছি.....।
- সাহরিয়া...ভাই আমার ভুল হয়ে
গেছে মাফ করে দে ভাই।
- ঠিক আছে যা, এমন সম্মান
দিবি সব সময়।
- নাম্বারটা দে।
- ঐ টাই আসল নাম্বার.. হি হি হি।
- সালা তুই একটা....।
- হারামী.... জানি সেটা।
সেদিনের মতো বাসাই চলে আসছি...
বাসাই এসে খেয়ে দেয়ে পা টান টান করে ঘুমাই গেছি...।
এক ঘুমে রাত্রে উঠছি..
আবার খেয়ে দেয়ে ঘুমাইতে
যেয়ে আর ঘুম ধরছে না।
ওহহহহহহ ক্যান যে সারাদিন
ঘুমাইতে গেলাম।
ঘুম আসছে না তাই বাহিরে হাঁটতে
গেলাম।
একটু হাঁটতেই সামনে দেখি একটু
মেয়ে...
মেয়ে বললে ভুল হইবো,
যেন একটা পরী, আসলে মানে
আমার কাছে মনে হইতেছে আর কী।
আর ভয় ও লাগছে কোন মেয়ের
আত্তা না তো আবার..
না না আত্তা হলে আবার কাছে এত ব্যাগ
থাকবে নাকি।
তবু ভয়ে ভয়ে কাছে গেলাম।
কাছে যেতেই মেয়েটা
আহহহহহহহহহহ করে চিৎকার
দিয়ে উঠছে ।
- আরে আরে চিৎকার দিছেন ক্যান,
আমি কী আপনাকে কিডন্যাপ
করমু নাকি হুমমম।
আমি সারাদিন ঘুমাইছি তাই ঘুম ধরছিলো,
সে জন্য হাঁটতে বের হইছি।
আর আপনাকে দেখে মনে হলো বিপদে
পড়ছেন তাই ও কাছে আসছি।
- ওহহহহহহহহহ....সরি।
আসলে আমি এখানে নতুন আসছি
আজকেই.. ট্রেন আসতে লেট
হওয়ায় অনেক রাত
হয়ে গেছে।
- সেটা বুঝলাম... যাবেন কই।
- এই যে এই ঠিকনাই।
- ঠিক আছে আমি চিনি...
বাট ওটা তো অনেক দূরে..
আর এখন রিক্সা ও পাবেন না।
তাঁর উপরে অনেক জিনিস।
- কী যে করি সেটাই ভাবছি।
- একটা উপাই আছে।
- কীইইইই।
- আমাকে যদি বিশ্বাস
করেন... আর যদি হাঁটতে
পারেন...
তাহলে আমি এগিয়ে দিতে
পারি।
- এই রাতে আপনাকে
বিশ্বাস করা ছাঁড়া আর
কোন উপাই দেখছি না...
আর একা যাওয়ার থেকে তো
ভালো।
- ঠিকআছে...তাহলে
ঐ ব্যাগটা আমাকে দেন আর হাঁটতে
থাকেন....
যেতে যেতে কথা বলি।
- আচ্ছা আপনার নাম কী?
- নীলা.... আপনার।
- সাহরিয়া.... এই এলাকার
সব থেকে কিউট বয়.... হি হি।
কেউ বলে না বাট আমি সবাইকে
বসে বেড়াই...।
আমাকে আপনি বলা দরকার
নাই.... তুমি করে বলো, আর
আমি ও তুমি বলবো কেমন ।
- আচ্ছা।
- নীলা এখানে একটু জোরে জোরে আসো।
- কেনো।
- ঐ টা আমার বাসা...
আমার বাপ যদি দেখে এত
রাতে আমি একটা মেয়ের সাথে
তাহলে... দুই দিন ভাত দিবে না।
- হা হা.... কেনো।
- অনেক কাহিনী অন্য একদিন বলবো
কেমন।
- ওকে।
আরো গল্প করতে করতে নীলার ঠিকনাই
পৌঁছে গেলাম।
- নীলা... ঐতো তোমার ঠিকনাই
চলে আসছি।
- সাহরিয়া... তুমি না অনেক
ভালো।
- কেনো....।
- কেনো আবার... এত রাতে
একটা একা মেয়েকে এত বড়
হেল্প করলা।
- দূর... এটা আবার হেল্প হলো নাকি।
- তুমি এত দূর যাবা কেমনে।
- আরে তুমি না থাকলে ও তো এমনিই
ঘুরতাম....
তোমাকে পেয়ে তো আরো টাইম
কাঁটলো।
- সাহরিয়া তুমি না একটা পাগল।
- এই টুকু টাইমেই বুঝতে পারছো।
- হুমমমমম.... তোমাকে চিনতে কারোর
বেশি টাইম লাগবে না বুঝলা।
- আচ্ছা আজকের মতো টাটা কেমন।
- ওকে ভালো করে যেও।
- হুমমমম।
পরেরদিন সকালে আবার কলেজের
সামনে টং দোকানে বসে বসে,
আড্ডা দিতেছি।
এমন সময় নীলার এন্ট্রি।
- সাহরিয়া ভাই দেখেন মেয়েটা
কী সুন্দর।
- ঐ খারাপ নজরে দেখবি না,
ওটা তোদের ভাবি বুঝলি।
- চাপা মারেন ভাই।
- ওকে দেখ... ওই আমাকে
ডাক দিবে।
এর মধ্যেই নীলার ডাক।
- সাহরিয়া... তুমি এখানে কেনো।
- আমি তো এখানেই থাকি।
- সত্যি...।
- হুমমমমমমমম.....তুমি এখানে
কেনো।
- আমি তো এই কলেজেই
ভর্তি হয়েছি...।
- আচ্ছা.... তুমি এবার কলেজে
যাও....।
পরে আবার কথা হবে।
- ওকে।
- এমন হা করে থেকে লাভ
নাই.... দেখলি তো।
- সাহরিয়া ভাই.... কেমনে কী
কও তো।
- কিছুই না.... আজকে বাসাই যামু
বাবা ফোন দিছিলো,
আর কেউ ওর দিকে
নজর দিবি না বলে দিলাম,
ভাবি হয় তোদের।
বাসাই যেতেই আবার একটা
খুশির খরব।
আমার বড় ভাইয়ের বিয়ে,
সে জন্য মেয়ে দেখে যামু
কালকে সকালে।
এর মধ্যে নীলার কথাই
মনে নাই।
কিন্তুু বউ দেখতে গিয়ে তো...
নিজের মাথাই আকাশ ভেঙ্গে
পড়লো।
বউ আর কেউ না... নীলা।
- মেজাজটা কেমন লাগে,
প্রেমের আগেই ছ্যাঁকা।
না সাহরিয়া তোর এইটার একটা
বিহিত করতেই হবে।
- বাবা আমি মেয়ের সাথে একটু কথা
বলমু।
- তোর বিয়ে নাকি তাই তুই কথা বলবি।
- আমার বিয়ে না হোক...
ভাবি তো আমারি নাকি।
- আপনারা কিছু মনে করেন না....
ও একটু এমনি কোন লজ্জা সরম
নাই... শয়তার একটা....।
- না না বিয়াই সাহেব.... এখন
এর ছেলে মেয়ে তো তাই।
অনুমতি পেঁয়ে গেছি.....
এবার যেমনেই হোক...
মনের কথা বলতেই হবে।
- সাহরিয়া... তোমার কী বুদ্ধি সুদ্ধি
কিছুই নাই।
- আগে বলো তুমি এই বিয়েতে
রাজি।
- জানি না।
- কাউকে লাভ করো।
- না.... কিন্তুু কেনো।
- আই লাভ হউ.....
সব একি থাকবে তবে... বড়
ভাই এর বদলে ছোটটা।
- কী বলছো এই সব।
- হুমমমমমম... শুধু একবার বলো
ভালোবাসো।
- হুমমমমমম।
- তাহলে চলো।
- কই।
- বিয়ে করতে।
- কীইইইই।
- হুমমমমমম।
- চলো ।।
বাবা ভাইয়ার সাথে এই বিয়ে হবে না....
আমি নীলাকে ভালোবাসি।
আর নীলা ও আমাকে ভালোবাসে।
- নীলা মা... তুমি কী সত্যি ঐ
গাধাকে ভালবাসো।
- মাথা নাড়ালো।
- আমি জানতাম এই শয়তান কে
নিয়ে আসলে কোন না কোন
ঝামেলা হবেই।
- বিয়াই সাহেব...
আমি যদি রাজি থাকেন।
- সবাই যখন রাজি... আমি
আর কী করতে পারি।
এর পরে বড় ভাইয়ের বদলে আমার
বিয়ে হয়ে গেলো.... হি হি হি।
- বাবা ঐ গাড়িতে যাও.... আমি আর
নীলা এই গাড়িতে যামু।
- কেনো।
- এমনি.... আর ড্রাইভার কাকু
তুমি ও অন্য গাড়িতে যাও।
আমি ড্রাইভ করে যামু।
- এখানে ও শয়তানি তোর গেল না।
আমি আর নীলা একটা গাড়ি করে
যাচ্ছি।
- সাহরিয়া আইসক্রিম খাবো।
- এখন।।।
- হুমমমমম।
- ওকে চলো.... আমাদের এমন ভাবে
নামতে দেখে সবাই হা করে আছে...
ইতিহাস এ এই প্রথম কেউ হয়তো বিয়ে
করে নিয়ে যেতে...
আবার রাস্তাই নেমে আইসক্রিম খাচ্ছে।
আইসক্রিম খেয়ে আবার গাড়িতে
উঠলাম।
- নীলা একটা পাপ্পি দিবা।
- কীইইইই এখন।
- হুমমমমমম...দাও না।
- না।
- পিলিজ।
- ওকে চোখ বন্ধ করো।
- চোখ বন্ধ করলে তো
একসিডেন্ট হবে।
- ওকে... তাহলে সোঁজা
তাঁকাই থাকবা।
- হুমমমমম।
- উমমমমমমমমমমমমম্মমমমমামমম
মমমমমমমমম।
- আহা আর একটু হইলেই তো
পুঁরো পেঁট ভরে যেতো....হি হি হি।
- দূর শয়তান একটা।
- আচ্ছা একটা গান শুনবা।
- ওকে।
- আর একখান পাপ্পি দিয়া
যাওওওওওও....।
- তাই না বেয়াদব... আসো থাপ্পড়
দেই।
- না থাক... পেঁট ভরাই আছে... হি হি হি।।
No comments