আর না
আর না
ক্ষুদ্র লেখক আমি
না_আর_কারো_পিছন পিছন
ঘুরমু না !!!
- একটা করে বাদাম ছিলে,
উাপরে ছুঁড়ে দিচ্ছি আর
লাফাই লাফাই খাইতেছি,
এমন করেই বাসাই যাচ্ছিলাম।
এমন সময় সমনে দিয়ে একটা
লাল গাড়ি চলে গেলো,
আর তখনি চোখটা আটকে গেলো,
আসলে লাল গাড়িটা দেখে
না, তাঁর ভিতরে থাকা একটা
পরীকে দেখে।
আর তখন থেকেই পরীটার পিছন
পিছন ঘুঁরাঘুরি শুরু।
সেদিন গাড়িটার পিছনে দৌঁড়াই
তাঁর বাড়িটা চিনে ফেলছিলাম।
আর কিছুদিনের মধ্যে সব কিছু
জোগার করে ফেলছি।
কোন কলেজে পড়ে, নাম কী।
নামটা কিন্তুু বেশ দাঁড়ুন,
পরীটার নাম ছিলো ঐশী।
সকাল হোক বিকেল হোক আর
রাত হোক সব সময় তাঁর পিছন পিছন
ঘুঁরতাম।
কলেজ থেকে বাড়ি, আবার বাড়ি
থেকে কলেজ।
একদিন খুব সাহস করে
ঐশীর সামনে গেলাম।
- হ্যালো এশী ।
- আপনি আমার নাম জানলেন
কেমনে।
- হি হি.... জেনে গেছি এমনি এমনি।
- ফালতু পোলো।
বলেই চলে গেলো।
বাড়িতে এসে সাত ঘন্টা
ঘাঁটাঘাঁটি করার পরে ঐশীর
ফেসবুক আইডি টা পাইছি...
বাট কয়েকটা মেসেজ
দিতেই আইডিব্লক ।
সতেরটা ফেক আইডি দিয়ে
ডিস্টার্ব করছি হি হি।
কিছুদিন পরে কই থেকে জানি
খুব সাহস উঁড়ে আসলো।
সোঁজাসুজি ঐশীর কাছে গিয়ে।
- ঐশী আমি সাহরিয়া।
- তো।
- ঐ যে ফেসবুকে আমিই
তোমাকে ডিস্টার্ব করতাম
হি হি।
- তো।
- আই লাভ হউ.... প্রথম বার
কাউকে প্রপোজ করলাম তাও
আবার বাদাম দিয়ে।
আর তখনি।
- ফটাস ফটাস করে দুই গালে
দুইটা থাপ্পড় দিয়ে চলে গেলো।
কিন্তুু আমি তো হাল ছাঁড়ার পোলা,
না...
রাতে ঐশীর রুমের নিচে গিয়ে
লাফাচ্ছি।
ওমনি সে জানালা খুলে নিচে
তাকালো।
- হি হি হি হি।
- ঐ তোমার কোন লজ্জা সরম নাই,
সকালেই না চর খেলে।
- সেটা তো সেই সকালে খাইছি..
এখন তো আবার খিদা লাগছে।
- দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা....
বাবা.... বাবা..... দেখো নিচে
একটা ছেলে কী জানি
আবোল তাবোল বলতেছে।
ওমনি দৌঁড়.........।
এমন করে টাকা দুই বছর ঘুরতেছি।
আমি ঐশীকে যতটাই ভালোবাসি,
আর সে আমারে তার থেকে বেশি
কী করে নিজে ও জানি না।
সে কলেজ ছেঁড়ে ভার্সিটতে চলে
গেছে,,
আর আমি তো আমিই হাদারাম।
হঠাৎ একদিন... কী হলো না হলো,
সোঁজা ঐশীর ভার্সিটিতে
চলে গেলাম....।
আর সবার সামনে জোঁরে জোঁরে
বললাম.......।
- ঐশী আই লাভ হউ.....।
- ঠাসসসসসসসসসসসসস....
তোর এত্ত জ্বালানোর পরে ও হয়নি।
এখন সোঁজা এখানে চলে আসছিস,
আর তোর কোন লজ্জা সরম নাই,
দূর কাকে কী বলছি,
তোদের মতো রাস্তার ছেলেদের
আবার লজ্জা...
কোন সাহসে আমাকে ভালোবাসতে
আসছিস হুমমমমমম।
ফকিন্নির বাচ্চা.... যদি তুই
একটু ভালো হয়ে থাকিস
আর কোনদিন আমার সামনে আসবি না।
শেষ বারের মতো বলছি
আমাকে আর ডিস্টার্ব করবি না।
বলেই ঐশী চলে গেলো।
- তখন বুঝতে পাড়ছিলাম..
আসলেই তো বিরক্ত করার একটা
লিমিট আছে...
আর আমি কই আর সে কই।
তবে তখন খুব কষ্ট হচ্ছিলো খুব,
কিচ্ছু বলতে পারছি না।
শুধু মাথা নিচে দিয়ে চলে আসলাম।
আসলেই আমি একটা বোকা,
নিজের লেভেলটা ক্রস করছিলাম,
এতদিন শুধু শুধু তাঁকে বিরক্ত
করলাম।
বাসাই আসতে আসতে চোখ
দুইটা ভিজে গেছিলো,
আমি কোনদিন কান্না করি না,
সেদিনই প্রথম।
সেদিনের পরে আর কখন ও
ঐশীর আশেপাশে ও যাই নাই।
তবে আমি তাঁকে খুব ভালোবাসি।
এমন করে দুই মাস কেঁটে গেলো,
ঐশী আমার সাথে অনেক কথা
বলার ট্রাই করছে বাট... আমি
তো একটা রাস্তার ছেলে তাই
আর তাঁর কাছে যাইনি।
একদিন টং দোকানে বসে বসে
চা খাচ্ছিলাম।
- সাহরিয়া ভাই ঐশী আপু
তোমারে ডাকতেছে।
- যার ডাকার সেই
তো ডাকবোই, ঐ দিকে কান
না দিয়া বসে থাক।
- আরে ভাই অনেকক্ষণ থেকে
তোমার জন্য অপেক্ষা করতেছে,
যাও না একটু।
- দেখছিস না কত্ত সুন্দর করে
চা খাইতেছি, আর তোর যদি
এতই দরদ লাগে তুই গিয়ে
কথা ক যা।
- নিজেই আগে পিছন পিছন
ঘুরতা আর এখন ভাব।
- যখন ঘুরছিলাম তখন তাঁর এত্ত
দরদ কই গেছিলো,
সেইডা গিয়া তাঁরে বল..
আর ফের যদি চা খাওয়ার সময় ঐ মাইয়ার কথা আমারে এসে বলছস...
সোজা মুখে চায়ের কাপ ছুঁড়ে
মারমু।
এক পার্ট গেছে একটু পরে
আর একটা পার্ট এসে হাজির।
- সাহরিয়া তোর মনে কী কোন
দয়া মায়া নাই...
ঐশী কখন থেকে তোর জন্য
দাঁড়াই আছে একটু তো যেতে
পারিস নাকি।
- কেনো.... তুই আমার সাথে
দাঁড়াই থাকোস নাই,
সেই সকাল দশটা থেকে চারটা পর্যন্ত
যখন দাঁড়াই থাকতাম ওরে
একটা বার দেখার জন্য...
তখন তো তাঁর একটু ও দরদ
আমার প্রতি হয় নাই।
- তুই সালা আসলেই একটা
হারামি।
- হুমমমমম ঠিক বলছস.....
এবার যা।
- আরে ভাই আর যাই কিছু হোক
এত্ত কিউট একটা মেয়ে তোর জন্য
প্রতিদন দাঁড়াই থাকে,
একটু হলে ও তো যেতে পারিস নাকি।
- আমি আর সেই আগের সাহরিয়াটা
নাইরে ভাই....
তোর মায়া দয়া লাগলে তুই যা।
এর কিছুদিন পরে রাস্তা
দিয়ে হেঁটে হেঁটে বাসাই ফিরতেছি।
প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এর পথ
তবু ও হেঁটেই যাই।
কারণ বিলাশীতা জিনিসটা
আমার জন্য না...।
এই রাস্তা টুকু হেঁটে গেলে
আমার সকালের চা আর রুটির
দাম অনায়াসে হয়ে যাবে।
হঠাৎ পিছন থেকে ঐশীর
ডাক....।
- সাহরিয়া একটু দাঁড়াবা প্লিজ।
- হুমমমমমম... বলেন।
- হেঁটে হেঁটে এতদূর কেমন করে
যাবা।
- আগে যেমন করে যেতাম... আর আপনার
বাবার দামি দামি গাড়ি থাকতে হঠাৎ
রিক্সা কেনো।
- এমনি...... ঐ আমার সাথে
এমন করছো কেনো।
- কই কিছুই তো করি নাই...
আগের মতো আর পিছন পিছন ঘুরি
না,
রাতে বাসার সামনে ও আর যাই না,
ফেসবুকে ডিস্টার্ব ও তো করি না,
আর কলেজের সামনে দাঁড়াই ও
থাকি না...
কিছুই তো করি না।
- ওই সব আর কেনো
করো না বলো।
- আমি আর আগের মতো রাস্তার
ছেলে নেই বলে,
আর আমি তো ফকিন্নির ছেলে,
আমার ঐ সব মানাই না।
যার পেঁট ভরে দুই বেলা খাবার
টাকা পকেটে থাকে না বলে।
আচ্ছা বাদ দাও আরো অনেকটা
পথ আমার যেতে হবে।
- সাহরিয়া.... সরি... মাফ
করে দাও প্লিজ।
- আরে দূর কাঁদছেন
কেনো।
মাফ তো আমার আপনার থেকে
চাওয়ার কথা...
আমিই আমার নিজের দিকে
না দেখে... আপনাকে
অনেক বিরক্ত করেছি।
- সাহরিয়া..... মাইর দিবো কিন্তুু।
- প্লিজ আমাকে যেতে দেন,
আমার আরো অনেকটা দূর
যেতে হবে।
- না....আসো রিক্সাই উঠো।
- বাদ দেন... আমার পায়ে হেঁটে যাবার
মতো অনেক টা শক্তি আছে।
বলেই চলে আসলাম....
চোখটা কেমন ঝাপসা হয়ে
আসছিলো...
ঐশী কে এই প্রথম কাঁদতে
দেখলাম।
যত যাই কিছু হোক অনেক
ভালোবাসি তো...
তবে হ্যা সেদিন ওকে বলছিলাম
যে আর কোনদিন তাঁকে ডিস্টার্ব
করবো না,
আর এই মুখ তাঁকে দেখাবো না।
তবু কেমন করে জানি ওর সামনে
পরে যাই...।
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে
উঠে...
ফ্রেশ হয়ে আসলাম।
এর মধ্যেই আবির দৌঁড়ে
রুমে এসে ঢুকলো।
- সাহরিয়া.... ঐশী অ্যাকসিডেন্ট
করছে জানিস কিছু।
- না তো.. কবে।
- কালকে বিকেলের দিকে।
- কীইইইইই......।
- হুমমমমমম।
- এখন ও কই আছে।
- হাসপাতালে আছে .... অবস্থা নাকি
অনেক খারাপ।
এটা শুনে নিজেকে আর
কন্ট্রোল করতে পারলাম না।
যাই হোক অনেক ভালোবাসি তো,
সোঁজা দৌঁড় হাসপাতালে।
যেতেই দেখি... ঐশীর বাবা
মা বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি তাঁদের চিনলে ও তাঁরা
আমাকে চেনে না।
- আংকেল ঐশী কই...।
- ঐ রুমে।
রুমে ঢুকতেই দেখি
ঐশী পাগলিটার মুখে অক্সিজেন
দেওয়া।
পরীটাকে আজকে কেমন জানি
অন্য রকম লাগতেছে।
আস্থে আস্থে গিয়ে পাগলিটার
মাথার কাছে বসলাম।
ওর হাতটা শক্ত করে ধরলাম,
আর মাথাই হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
খেয়ালি করিনি দুচোখ ভরে পানি
চলে আসছে...
আর হঠাৎ করে একটে ফোটা
পানি... ঐশীর গালে গিয়ে
পড়লো।
একটু পরে দেখি পাগলিটা আস্থে
আস্থে চোখ খুললো।
- ঐশী... আমাকে মাফ করে দাও
পিলিজ... সব দোষ আমার, আমিই
একটা পাগল ছিলাম।
আর তুমি কী হুমমমম... কেমনে অ্যাকসিডেন্ট
করলা শুনি...
যদি কিছু হয়ে যেতো তোমার,
আমি কী করতাম শুনি।
মানতেছি যে একটু রেগে ছিলাম
তাই বলে অ্যাকসিডেন্ট করবা।
একটা থাপ্পড় দিমু।
এমনে তাঁকাই আছো কেনো।
ঐশী তাঁর মুখ থেকে অক্সিজেন টা
খুললো।
- সাহরিয়া... আমার মনে হয়
আমি আর বাঁচব না, আমি
আমার পাপের শাস্তি পেয়ে গেছি।
আমাকে মাফ করে দাও প্লিজ।
- ঐ পাগলি এমন কথা বলবা না
একদম... তোমার কিছু হলে আমি
ও তো মরে যাবো।
- সাহরিয়া... শেষ বার আমাকে
একবার বলবা... ভালোবাসি তোমাকে
ঐশী।
- এমন বলো কেনো.... তোমাকে অনেক
ভালোবাসি ঐশী...
তোমাকেই তো ভালোবাসি...
আমাকে ছেঁড়ে যেও না রে
তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি।
- পাগল একটা কাঁদছো কেনো হ্যা।
- আমাকে ছেঁড়ে যাবা এমন কথা
বলছো কেনো।
- সাহরিয়া... আমাকে একটু তোমার
বুকের মধ্যে নিবে।
- হুমমমমম....
পাগলিটা কে.... শক্ত করে
জরিয়ে ধরলাম।
- জানো সাহরিয়া তোমাকে ও না
আমি অনেক ভালোবেসে ফেলছি।
হঠাৎ ডাক্তার এসে একটু কাঁশি....।
আমি অনেক লজ্জা পাইছি... হি হি হি।
- আপনি ঐশীর কে হন।
- এদিন ওদিন তাঁকিয়ে বললাম,
ফ্রেন্ড।
- ঐ মিথ্যা কথা বলো কেনো....
আংকেল এটা আমার হবু বর।
- দেখেই বুঝছি.....
জারাই ধরবে ঠিকআছে,
তবে একটু আস্থে ধইরো..
বুঝতেই তো পারছো... অ্যাকসিডেন্ট
এর রুগি।
- জ্বী হ্যা...।
আচ্ছা সুস্থ হতে আর কত দিন
লাগবে।
- বেশি না..... দুই তিন বছর।
- কীইইইইই................।।
- হা হা হা...... মজা করলাম...
ঐশী আমাদের সব বলেছে
তোমার ব্যাপারে তুমি কতটা
ফাজিল ছিলে....
আর কতটা ভালোবাসতে ওকে।
তারপর অসময়ে এসে
হয়তো ডিস্টার্ব করলাম।
- আরে দূর আংকেল কী যে বলেন
না।
- ঠিকআছে.... আমি তাহলে যাচ্ছি।
আর আস্থে করে জরাই ধইরো
কেমন।
- হুমমমমমম।
- ঐ ফাজিল আসো...
আবার জরাই ধরো।
- এই নানা তোমার মা বাবা
আসবে আবার।
- যাই আসুক ধরবা নাকি
বলো।
- ওকে........ এই জরাই
ধরলাম...।
- আর কারো পিছন পিছন এমন
ঘুরবা না তো।
- একটা পরী কে তো পাইছিই
আবার কারো পিছে ঘুঁরে এইটা
হারামু নাকি... হি হি হি।।।
>>সমাপ্ত<<
No comments